অগ্রণী ব্যাংকের চেক লেখার নিয়ম
আপনি যদি একজন অগ্রণী ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট হোল্ডার হয়ে থাকেন তাহলে আপনার জন্য অগ্রণী ব্যাংকের চেক লেখার নিয়ম জানা খুবই জরুরী। এই লেখাটিতে অগ্রণী ব্যাংকের চেক লেখার সম্পূর্ণ পদ্ধতি ছবি সহ বিস্তারিত বর্ণনা করা হবে।
আশা করি এই লেখাটি সম্পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে দেখলে, কারো সহযোগিতা ছাড়াই ঘরে বসে অগ্রণী ব্যাংকের চেক লিখতে পারবেন। এছাড়াও এই পদ্ধতি অবলম্বন করে ঘরে বসে যেকোন ব্যাংকের চেক লিখতে পারবেন খুব সহজেই।
ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলনের জন্য ব্যাংকের চেক খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ব্যাংক থেকে টাকা তোলার পূর্বে সঠিকভাবে ও সুন্দরভাবে একটি চেক লেখার প্রয়োজন হয়। সাধারণত চেক বই ব্যাংক থেকে প্রদান করা হয়, আমরা শুধুমাত্র প্রয়োজনীয় তথ্যগুলো দিয়ে চেক পূরণ করি।
অগ্রণী ব্যাংকের চেক লেখার নিয়ম
অগ্রণী ব্যাংকের চেক লেখার জন্য প্রথমে একটি নিরিবিলি জায়গায় যান। এরপরে আপনার নাম, টাকার এমাউন্ট, Date / তারিখ এবং আপনার Signature প্রদান করুন। এরপরে চেকের অপর পৃষ্ঠায় ২টি স্বাক্ষর করে আপনার মোবাইল নাম্বার বসিয়ে।
এই পদ্ধতিতে খুব সহজেই আপনি অগ্রণী ব্যাংকের চেক লিখতে পারেন। তবে চেক লেখার ক্ষেত্রে অবশ্যই খেয়াল রাখবেন বাংলা এবং ইংরেজি ভাষা মিক্স করে চেক লিখবেন না, যেকোনো একটি ভাষায় সুন্দরভাবে চেকটি লিখতে হবে।
আরো জানতে পারেনঃ একাউন্ট পে চেক জমা দেয়ার নিয়ম।
চেক লেখার আগে প্রয়োজনিয় সতর্কতা
চেক লেখার ক্ষেত্রে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে, অন্যথায় আমাদের চেকটি বাতিল হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। সতর্কতা গুলো হলোঃ
- চেকের মধ্যে কোন ধরনের কাটাচিরা করা যাবে না।
- চেক লেখার সময় অবশ্যই যেকোনো একটি ভাষা ব্যবহার করতে হবে। বাংলা এবং ইংরেজি ২টি ভাষা মিক্স করে চেক লেখা যাবে না।
- প্রয়োজনের ক্ষেত্রে কমা (,) ব্যবহার করুন।
- চেকের মধ্যে অপ্রয়োজনীয় দাগ দেয়া যাবে না।
- চেকটি লেখার জন্য সুবিধা জনক কোন জায়গায় অবস্থান করুন।
চেক লেখার সম্পূর্ণ পদ্ধতি
অগ্রণী ব্যাংকের চেক লেখার ক্ষেত্রে আপনাকে ৩ টি ধাপ পূরণ করতে হবে। ধাপগুলো হলো গ্রাহকের অংশ, মূলচেক ও টোকেন। মূলচেক এবং টোকেন ব্যাংকের অংশ হিসেবে টাকা তুলতে ব্যাংক শাখায় নিয়ে যেতে হবে। নিচের ছবিটির দিকে লক্ষ্য করুন –
এখানে দেওয়া গ্রাহকের অংশটুকু আপনার চেক বইয়ের সাথে থাকবে। গ্রাহকের অংশের তথ্য পূরণ করার কারণ হলো আপনি কখন কত টাকা তুলেছেন এই সম্পর্কে পরবর্তীতে ধারণা পাবেন। গ্রাহকের অংশ পূরণ না করলেও সমস্যা নেই, তবে পূরণ করা ভালো।
বাকি মূলচেক ও টোকেন (ব্যাংকের অংশ) পূরণ করে ব্যাংক শাখায় জমা দিতে হবে। অগ্রণী ব্যাংকের চেক পূরণ করার ধাপগুলো নিচে বর্ণনা করা হলো।
১.তারিখ লিখুন
প্রথমে মূল চেকের ডান কর্নারে থাকা তারিখ বক্সে টাকা তোলার তারিখ বসিয়ে দিন। এরপরে টোকেনের তারিখ বক্সে একই তারিখ বসিয়ে দিন। তারিখ ১২/০১/২৩ এভাবে বসাতে হবে।
২.প্রদান করুন
এরপরে প্রদান করুন বক্সে যে টাকা তুলবে তার নাম লিখে দিবেন। যদি একাউন্ট হোল্ডার নিজে টাকা তুলে তাহলে “নিজ / Self” লিখুন। যদি একাউন্ট হোল্ডার ব্যতীত অন্য কেউ টাকা তুলে তাহলে তার নাম লিখে দিতে হবে।
আরো জানতে পারেনঃ চেক বই হারিয়ে গেলে করণীয়।
৩.টাকার এমাউন্ট কথায় লিখুন
প্রদান করুন বক্সে নাম লেখার পরে নিচের লাইনে থাকা “টাকা”র সামনে আপনি কতটাকা তুলতে চান তা কথায় লিখে দিবেন। যদি আপনি ১০,০০০ টাকা তুলতে চান তাহলে “দশ হাজার টাকা মাত্র” এভাবে লিখে দিবেন। টাকার অ্যামাউন্ট যতই থাকুক, টাকার এমাউন্ট লেখার শেষে “মাত্র” উল্লেখ করবেন।
৪.টাকা অংকে
এরপরে টাকার অ্যামাউন্ট অংকে লিখতে হবে। চেকের শেষ অংশে থাকা টাকা বক্সে, আপনি কত টাকা তুলতে চান তা অংকে উল্লেখ করবেন। এবং টাকার অ্যামাউন্ট উল্লেখ করার পরে (/-) এই চিহ্নটি ব্যবহার করতে হবে।
সাধারণত সেফটির জন্য (/-) চিহ্নটি ব্যবহার করা হয়। মনে করেন আপনি ব্যাংক থেকে ১০ হাজার টাকা তুলতে চান তাহলে (১০,০০০/-) এভাবে লিখে দিবেন।
৫.অ্যাকাউন্ট হোল্ডারের স্বাক্ষর
সর্বশেষে “হিসাবধারীর স্বাক্ষর” এর উপরে অ্যাকাউন্ট হোল্ডারের স্বাক্ষর দিতে হবে। আপনি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলার সময় যেই স্বাক্ষর ব্যাংকে দিয়েছিলেন, একই স্বাক্ষর চেক লেখার ক্ষেত্রে ব্যবহার করতে হবে। আপনার প্রদত্ত স্বাক্ষরের সাথে ব্যাংক চেকের স্বাক্ষর মিল করবে।
৬.অপর পৃষ্ঠায় স্বাক্ষর
এরপরে একই স্বাক্ষর চেকের অপর পৃষ্ঠায় ২ বার দিয়ে মোবাইল নাম্বার লিখে দিতে হবে। অ্যাকাউন্ট হোল্ডার ব্যতীত যদি অন্য কেউ টাকা তুলে তাহলে চেকের অপর পৃষ্ঠায় একাউন্ট হোল্ডার এর স্বাক্ষরের পাশাপাশি ওই ব্যক্তির ২ টি স্বাক্ষর ও মোবাইল নাম্বার লিখে দিতে হবে। নিচের ছবিটিতে চেকপূরণ সম্পর্কে বিস্তারিত দেওয়া আছে।
সংক্ষিপ্ত আকারে চেক লেখার সম্পূর্ণ প্রসেসঃ
- প্রথমে তারিখ লিখুন।
- এরপরে প্রদান করুন এর জায়গায়, যে টাকা তুলবে তার নাম লিখুন। যদি অ্যাকাউন্ট হোল্ডার নিজে টাকা তুলে তাহলে “নিজ” লিখে দিন।
- এর পরেরলাইনের টাকা অপশনে যত টাকা তুলবেন তা কথায় লিখুন। টাকার এমাউন্ট লেখার পরে “মাত্র” লিখে দিন।
- তারপরে চেকের শেষ অংশে থাকা বক্সে অংকে টাকার এমাউন্ট লিখে শেষে (/-) এই চিহ্নটি ব্যবহার করুন।
- এরপরে অ্যাকাউন্ট হোল্ডারের স্বাক্ষর দিন।
- চেকের অপর পৃষ্ঠায় একাউন্ট হোল্ডারের স্বাক্ষর ও মোবাইল নাম্বার সহ, যে টাকা তুলবে তার স্বাক্ষর ও মোবাইল নাম্বার বসিয়ে দিন।
এই পদ্ধতিতে খুব সহজেই অগ্রণী ব্যাংকের চেক লিখতে পারবেন। চেক লেখার ক্ষেত্রে অবশ্যই যেকোন একটি ভাষা ব্যবহার করতে হবে। যদি বাংলা ও ইংরেজি ভাষা মিক্স করে চেক লিখেন সেক্ষেত্রে চেকটি বাতিল হিসেবে গণ্য হবে।
আরো জানতে পারেনঃ নতুন চেক বইয়ের জন্য আবেদন করার পদ্ধতি।
এভাবে করে চেকের ৩টি অংশ সঠিকভাবে পূরণ করুন। নিচের ভিডিওটি দেখে খুব সহজেই অগ্রণী ব্যাংকের চেক লেখার নিয়ম সম্পর্কে জানতে পারবেন।
আমাদের শেষকথা
সম্মানিত পাঠকবৃন্দ আশাকরি অগ্রণী ব্যাংকের চেক লেখার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। ব্যাংকের চেক লেখার ক্ষেত্রে অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করবেন। চেকের মধ্যে কোন ধরনের কাটাচিরা করা যাবে না। চেকের মূল অংশ ও টোকেন সর্তকতার সাথে পূরণ করতে হবে।
FAQs
চেক লেখার ক্ষেত্রে যদি কোন ধরনের ভুল হয় তাহলে কাটাকাটি না করে, ভুল তথ্যের উপরে কলম দিয়ে একটি দাগ দিয়ে কেটে দিবেন এরপরে নিচে সঠিকভাবে তথ্যটি উল্লেখ করবেন।
বর্তমানে অগ্রণী ব্যাংকের প্রধান ব্যক্তিত্ব ও চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োজিত আছে ডঃ জায়েদ বখত এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও CEO হিসেবে নিয়োজিত আছেন জনাব মুরশেদুল কবীর।