জনতা ব্যাংক চেক লেখার নিয়ম সহজ পদ্ধতিতে

আপনি যদি একজন জনতা ব্যাংকের গ্রাহক হয়ে থাকেন এবং আপনি যদি জনতা ব্যাংকের চেক লিখতে না পারেন, তাহলে এই লেখাটি আপনার জন্য। এই লেখাটিতে জনতা ব্যাংক চেক লেখার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।

১৯৭২ সালে বাংলাদেশে জনতা ব্যাংকের পথচলা শুরু হয়। বর্তমানে বাংলাদেশ জনতা ব্যাংক লিমিটেডের বিদেশি ৪টি শাখা সহ মোট ৯২১ টি শাখা রয়েছে। জনতা ব্যাংক এটিএম, রিটেইল ব্যাংকিং, ব্যাংকিং, ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকিং, কমার্শিয়াল ব্যাংকিং, বৈদেশিক রেমিটেন্স সেবা প্রদান করে।

ব্যাংকে লেনদেনের জন্য আমরা চেকবুক ব্যবহার করি। কিন্তু অনেক সময় সঠিকভাবে চেক লিখতে না পারার কারণে আমাদের ব্যাংকিং কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটে। এই লেখাটি সম্পূর্ণ বুঝে নিলে আপনি খুব সহজেই একটি জনতা ব্যাংকের চেক লিখে নিতে পারবেন।

জনতা ব্যাংক চেক লেখার নিয়ম

Janata Bank Limited এর চেক লেখার জন্য প্রথমে তারিখ দিন। এরপরে Pay to বসিয়ে দিন, তারপরে টাকার পরিমান লিখে taka-র পরিমানটি পুনরায় কথায় লিখুন। এরপরে Signature বা স্বাক্ষর করে চেকের পিছনে পুনরায় স্বাক্ষর ও মোবাইল নাম্বার লিখুন।

একটি চেকবুক সঠিক নিয়মে লিখতে হবে। চেকবুক লেখার সময় কোন ধরনের কাঁটা-চিরা করা যাবে না এবং জনতা ব্যাংকের চেকবুকে সকল তথ্য স্পষ্ট ভাবে উল্লেখ করতে হবে। যেন ব্যাংক কর্মকর্তা খুব সহজেই আপনার তথ্যগুলো বুঝতে পারে।

সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেলঃ একাউন্ট পে চেক জমা দেয়ার নিয়ম।

জনতা ব্যাংকের চেক লেখার আগে সতর্কতা

  • প্রথমে নির্ধারণ করতে হবে আপনি ব্যাংক থেকে কত টাকা উঠাবেন।
  • এবং চেক লেখার জন্য একটি পরিবেশ বান্ধব জায়গায় অবস্থান করুন।
  • চেক লেখার ক্ষেত্রে কোন ধরনের কাটাচিরা করা যাবে না, যদি কোন ভুল হয় তাহলে এক টানে ভুল তথ্যটি কেটে পাশে সুন্দর করে লিখে দিবেন।
  • চেক লেখার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সিম্বল গুলো ব্যবহার করুন।
  • যেকোনো একটি ভাষায় চেক লিখতে হবে। বাংলা ও ইংরেজি ভাষার মিশ্রণে চেক লেখা যাবে না।
  • টাকার অংকের শেষে (/-) চিহ্ন ব্যবহার করুন।
  • টাকার অ্যামাউন্ট অংকে ও কথায় লিখতে হবে।
  • স্পষ্টভাবে স্বাক্ষর দিতে হবে।
  • চেকের সব অংশগুলো পূরণ করতে হবে।
  • চেক লেখার শেষে চেকের অপর পৃষ্ঠায় ২ বার স্বাক্ষর দিয়ে মোবাইল নাম্বার লিখতে হবে।

সম্মানিত পাঠকবৃন্দ, জনতা ব্যাংক চেক লেখার নিয়ম নিচে বিস্তারিত আকারে উল্লেখ করা হলো। আশা করি সম্পূর্ণ লেখাটি মনোযোগ দিয়ে দেখলে খুব সহজেই একটি জনতা ব্যাংকের চেক লিখতে পারবেন। পুনরায় সতর্কতা করা হচ্ছে যেকোনো একটি ভাষায় এই চেকবুকটি লিখতে হবে।

জনতা ব্যাংক চেক লেখার নিয়ম

১.Date বা তারিখ বসাতে হবে

চেকবুক লেখার শুরুতেই, চেকের প্রথমে ডান দিকে থাকা “Date বা তারিখ” অপশনে DD MM YYYY ফরমেটে চেকের তারিখ লিখে দিতে হবে।

  • DD – এর জায়গায় দিন।
  • MM – এর জায়গায় মাস।
  • YYYY – এর জায়গায় বছর।

উল্লেখ করতে হবে। যেমন: ২৮/০৭/২০২৩, চেকের শুরুতেই আপনারা তারিখ বসিয়ে নিবেন। এরপরে বাকি সকল তথ্যগুলো সুন্দরভাবে পূরণ করতে হবে।

২.Pay to বা বাহক এর নাম উল্লেখ করুন

এই অপশনে আপনাকে উল্লেখ করতে হবে এই চেকের টাকা আপনি কাকে দিতে চাচ্ছেন। যদি নিজে টাকা উঠাতে চান তাহলে ”Pay to বা বাহক” অপশনে Self বা নিজ লিখে দিবেন। আর যদি অ্যাকাউন্ট হোল্ডার ব্যতীত অন্য কাউকে দিয়ে টাকা উত্তোলন করতে চান তাহলে এখানে তার নাম উল্লেখ করবেন।

একটি চেক লেখার ক্ষেত্রে Pay to বা বাহক অপশনটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এখানে কোন ধরনের কাঁটা চিড়া করা যাবে না। তাই প্রথমে ভেবে সুন্দরভাবে চেকের তথ্যগুলো পূরণ করতে হবে। যদি আপনার চেকটি বাংলায় হয় তাহলে বাংলায় সকল তথ্য পূরণ করতে পারেন আর যদি ইংরেজিতে হয় তাহলে ইংরেজিতে পূরণ করতে পারেন।

৩.The sum of taka বা টাকার পরিমাণ লিখুন

এই অপশনে আপনি এই চেকের মাধ্যমে ব্যাংক থেকে কত টাকা উত্তোলন করতে চান তা লিখতে হবে। যদি আপনারা চেকটি বাংলায় লিখেন তাহলে “দশ হাজার টাকা মাত্র” এভাবে লিখুন। আর যদি চেকটি ইংরেজিতে লিখেন তাহলে “Ten thousand taka only” এভাবে লিখুন।

আপনি কত টাকা উত্তোলন করতে চান সেই অনুযায়ী বাংলায় কিংবা ইংরেজিতে টাকার পরিমাণ লিখে দিবেন। তবে টাকার পরিমাণ লেখার পরে অবশ্যই “মাত্র” কথাটি উল্লেখ করবেন।

সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেলঃ নতুন চেক বইয়ের জন্য আবেদন করার পদ্ধতি।

৪.TK বা টাকা সংখ্যায় লিখুন

চেকের সিকিউরিটি বর্ধনে পুনরায় টাকার এমাউন্ট অংকে লিখতে হবে। একইভাবে যদি আমরা চেক ইংরেজিতে লিখি তাহলে “10,000/-” এভাবে লিখতে হবে এবং যদি চেক বাংলায় লিখি তাহলে “১০,০০০/-” এভাবে লিখতে হবে।

“TK বা টাকা” বক্সে অংকে টাকার অ্যামাউন্ট উল্লেখ করার পরে (/-) এই চিহ্নটি ব্যবহার করতে হবে। যেমন: ২০,০০০/-, ৫০,০০০/-, ৭৫,০০০/-, ১,০০,০০০/-, ১০,০০,০০০/-, ইত্যাদি। আপনার কাঙ্খিত অ্যামাউন্ট লেখার পরে (/-) চিহ্নটি ব্যবহার করুন।

৫.Signature বা স্বাক্ষর করুন

উপরের সকল তথ্যগুলোর সঠিকভাবে পূরণ করার পরে, চেকের নিচের দিকে থাকা A/C Holder’s Signature অপশনে একাউন্ট হোল্ডার এর স্বাক্ষর করতে হবে। হয়তোবা আপনার চেকে A/C Holder’s Signature ব্যতীত অন্য কিছু লেখা থাকতে পারে।

আপনারা চেকের দিকে লক্ষ্য করে বুঝতে পারবেন। A/C Holder’s Signature অপশনে খুব সুন্দর ভাবে বিনা কাটা চিড়ায় অ্যাকাউন্ট হোল্ডারের স্বাক্ষর করুন। আপনি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলার সময় যেই সাক্ষরটি ব্যবহার করেছিলেন অবশ্যই সেই স্বাক্ষরটি প্রদান করতে হবে।

৬.পিছনের পৃষ্টায় অতিরিক্ত স্বাক্ষর দিন

প্রথম পৃষ্ঠায় সকল তথ্যগুলো সঠিকভাবে পূরণ করার পরে চেকের দ্বিতীয় পৃষ্ঠায় তথা চেকের দ্বিতীয় সাদা পৃষ্ঠায় আপনাকে দুইটি স্বাক্ষর করতে হবে এবং আপনার মোবাইল নাম্বারটি লিখে দিতে হবে।

যদি একাউন্ট হোল্ডার ব্যতীত অন্য কেউ টাকা তুলতে চায় সেক্ষেত্রে চেকের অতিরিক্ত পৃষ্ঠায় অ্যাকাউন্ট হোল্ডারের দুইটি স্বাক্ষর ও মোবাইল নাম্বার সহ যে টাকা উত্তোলন করতে চায় তার দুইটি স্বাক্ষর ও মোবাইল নাম্বার প্রদান করতে হবে।

আমাদের শেষকথা

সম্মানিত প্রিয় পাঠকবৃন্দ, আশা করি কিভাবে একটি জনতা ব্যাংকের চেক লিখবেন এই সম্পর্কে আপনারা বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। উপরে আমরা জনতা ব্যাংকের চেক লেখার নিয়ম ছবি সহ বিস্তারিত উল্লেখ করেছি।

এই লেখাটিতে দেখানো পদ্ধতি ব্যবহার করে খুব সহজেই একটি জনতা ব্যাংকের চেক লিখতে পারেন। আর হ্যাঁ, একটি চেকে মূলত তিনটি অংশ থাকে। আপনারা সঠিক তথ্য দিয়ে সব অংশগুলো পূরণ করবেন।

FAQs

জনতা ব্যাংক একাউন্ট চেক করার নিয়ম?

জনতা ব্যাংকের একাউন্ট চেক করার জন্য সরাসরি নিকটস্থ ব্যাংক শাখায় ভিজিট করতে পারেন। অথবা যদি আপনাদের জনতা ব্যাংক শাখায় ইন্টারনেট ব্যাংকিং চালু থাকে তাহলে Internet Banking এর মাধ্যমে একাউন্ট চেক করতে পারবেন।

জনতা ব্যাংক কত সালে প্রতিষ্ঠিত হয়?

১৯৭২ সালে Janata Bank Limited প্রতিষ্ঠা করা হয়। বর্তমানে এই ব্যাংকের সদর দপ্তর ঢাকা বাংলাদেশ অবস্থিত। বর্তমানে জনতা ব্যাংকের চেয়ারম্যান ডঃ এস এম মাহফুজুর রহমান এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ আব্দুস সালাম আজাদ।

Similar Posts

One Comment

  1. MiTON SHiL says:

    জনতা ব্যাংক এখন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *